আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে দুই ব্যাংককে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

3
তারল্য সহায়তা 

তারল্য সংকটে থাকা দুই ব্যাংককে থেকে সরাসরি সহায়তা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকা ছাপিয়ে ইসলামী ধারার সোশ্যাল ইসলামী ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে দেওয়া হবে। আগের সপ্তাহে এসব ব্যাংক থেকে আবেদন আসলে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর তাতে অনুমোদন দিয়েছেন।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে দেড় হাজার কোটি টাকা ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকার সরাসরি তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

 

“এটা হাই-পাওয়ার্ড মানি কিংবা টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলা যায়। জামানত ছাড়াই এ তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

গতবছর ৫ অগাস্টের পর রাজনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের সঙ্গে ব্যাংক খাতেও সংস্কার শুরু হয়। ক্ষমতার পালাবদলের পর এ দুই ব্যাংকসহ সাতটি ব্যাংকের পরিচালন পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ হারায় আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এস আলম গ্রুপ।

 

সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয় আহসান এইচ মনসুরকে। গভর্নরের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা পর্ষদের ব্যাংকগুলোতে তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেন।

 

এরপর থেকেই ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়। ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে এমন গুজবেও ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত উত্তোলন করা শুরু করেন। তখন এসব ব্যাংকের তারল্যের ওপর এক ধরণের চাপ তৈরি হয়। এমন অবস্থায় সে সময় প্রথমে আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা নেওয়ার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এটা ফল্প্রসূ না হওয়ার কারণে ২০২৪ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছয় ব্যাংকে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়।

 

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি এও দাবি করেছিলেন একদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসরি সহায়তা দেওয়া হয়েছে যা ছাপা টাকার সমতুল্য, আবার এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের’ মাধ্যমে এসব টাকা ব্যাংকগুলো থেকে উঠিয়ে নিচ্ছে।

 

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম), আর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তার জামাতা বেলাল আহমেদ।

 

নভেম্বরে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়ার পর আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা  নিয়েছিল এসব ব্যাংক। এর মধ্যে এসআইবিএলকে ৫ হাজার ৫০০ কোটি এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া টাকা ছাপিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংককে ২ হাজার কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংককে ২০০ কোটি, আইসিবি ইসলামী ব্যাংককে ১০ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে ২ হাজার কোটি, এক্সিম ব্যাংককে ৮ হাজার ৫০০ কোটি এবং এবি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here