ব্যাংক আমানত কি হবে ? বন্ধ হবে কোন কোন ব্যাংক?

17
ব্যাংক আমানত

ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে সেই প্রতিষ্ঠান অবসায়ন হয়ে গেলে সব আমানতকারী মাত্র এক লাখ টাকা করে পাবেন ( ব্যাংক আমানতকারী ) এমন খবর আসলে গুজব! এক্ষেত্রে প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে বীমা তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা, পরে পুরো টাকা আইন অনুযায়ী ফেরত দেয়া হবে। এ বিষয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে আগামীতে কোন ব্যাংক বন্ধ হবে না- জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমানতকারীদের আশ্বস্ত করতে চাই, কোন ব্যাংক বন্ধ হবে না।’ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র ৮ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব বীমাকৃত নয়। অর্থাৎ ৮ শতাংশ আমানতকারী ঝুঁকিতে আছেন। এছাড়া বাকি ৯২ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব সম্পূর্ণ বিমাকৃত।’ তিনি বলেন, ‘কোন ব্যাংক যদি বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ১৮০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীকে এক লাখ টাকা দিয়ে দেবে। বাকি টাকা পরে বন্ধ হওয়া ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীকে পরিশোধ করা হবে।

 

১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় যে আইন করা হয়, সেখানে আমানতের অর্থ ফেরত দেয়ার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরে দুই হাজার সালে আমানত বীমা আইন প্রবর্তন করে এক লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে এই আইনে আমানতকারীকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে সংশোধিত আইনে এটি বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

 

তিনি জানান, ’১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিলে ৮ হাজার ৭৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা হয়েছে। কোন ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারীদের প্রথম তিন মাসের মধ্যে এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হবে। এক লাখ টাকা দিলেই ৯২ শতাংশ আমানতকারীর টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে এই টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলছে।

 

সিরাজুল ইসলাম জানান, এর আগে শুধুমাত্র ব্যাংকের আমানতকারীরা বীমা সুবিধা পেতেন। কিন্তু নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব আমানতকারীই এ সুবিধা পাবেন। ‘প্রথমে ব্যক্তি গ্রাহকের টাকা ও পর্যায়ক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেয়া হবে। সবশেষে টাকা পাবেন প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ।’

 

আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আর কোন ব্যাংক বন্ধ হবে না বলেও আশ্বাস দেন মুখপাত্র। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোন ব্যাংক অবসায়নের ঘোষণা দিলে অনধিক ১৮০ দিনের মধ্যে আমানতকারীদের এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল’ থেকে পরিশোধ করা হবে। এদিকে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া বা বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার।

 

প্রচলিত বিধান অনুযায়ী, কোন ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীরা ক্ষতিপূরণ বাবদ সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পাবে। এই অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে আমানতকারীদের দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। আমানত সুরক্ষা আইন-২০’র খসড়া নিয়ে সমালোচনার মুখেই এমন চিন্তা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here